সুচিপত্র
ধারাবাহিক গল্পঃ ইসলামিক স্বামী ও স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প (Islamic Love story of husband and wife)
ফজরের পর উনি কুরআন নিয়ে এসে বললেন,
–এই নাও। আজ তুমি কুরআন পড়ো তো, আমি দেখি, কোথাও ভূল হয় কিনা।
–আপনার মুখে মুখে পড়লেই তো সঠিকভাবে পারব কুরআন পড়তে।
–না আমিনা, পারবে না।
–কারণ?
–কারণ হচ্ছে, তাজউইদ!কুরআন তাজউইদের সাথে তিলাওয়াত করা ফরজ। নাহয় অর্থের বিকৃতি ঘটতে পারে। যেমন ধরো, আমাদের কালিমা তাইয়্যিবার প্রথম অংশ কি বলোতো? "লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ"
না? এবার এটার অর্থ বলো তো?
–হ্যাঁ!!!!!!! অর্থ হলো, আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই।
–এই দেখো, এই ‘লা’ বলার সময় একটা টান আছে। দেখো তোমায় আরবীটা দেখাই, এটা কি? লাম আলিফ যবর লা.. না? কিন্তু তুমি যদি টান না দিয়ে পড়ো, তাহলে সেটা হবে ‘লাম’ যবর লা, তখন এই পূর্ণ কালিমার অর্থ বদলে যায়, তখন এই কালিমার অর্থ হবে, ‘আল্লাহ ছাড়া নিশ্চয়ই মাবুদ আছে’
নাউযুবিল্লাহ, দেখলে তো কিভাবে অর্থটা বদলে গেল?
আবার দেখো, সূরা ইখলাসের প্রথম আয়াত, ক্বুল হু ওয়াল্ল হু আহাদ। খেয়াল করো, শুরুতে যে হরফ আছে, সেটা কিন্তু কাফ(ك) নয় ক্বফ (ق)। এই হরফটা উচ্চারণের সময় তোমায় একটু ধাক্কা দিয়ে উচ্চারণ করতে হবে। তখন এই ক্বুল শব্দটির অর্থ হবে বলো, আর পুরো বাক্য ‘ক্বুল হু ওয়াল্লহু আহাদ’ এর অর্থ হবে, ‘বলো, তিনিই আল্লাহ এক এবং অদ্বিতীয়’।
কিন্তু তুমি যদি ক্বুল শব্দটা উচ্চারণের সময় ক্বফের উপর জোর না দিয়ে স্বাভাবিকভাবে ‘কুল’ পড়ে যাও, তখন পুরো বাক্যটির অর্থ হবে, ‘খেয়ে ফেলো আল্লাহ এক’, আস্তাগফিরুল্লাহ!
তারপর আবার দেখো, একই রকম যেসব অক্ষর আছে, যেমন ক্বফ(ق)-কাফ(ك), হা(ح), -হা(ه), আলিফ(ا)-আইন(ع)-হামযা(ء), ছা(ث)-সোয়াদ(ص)-সিন(س), তা(ت)-ত্বোয়া(ط), জিম(ج)-যাল(ذ)-যোয়া(ظ), লাম(ل)-লামআলিফ(لا)!!!!!!!
এই শব্দের উচ্চারণ গুলো কিছুটা কাছাকাছি বলে আমরা একই উচ্চারণ দিয়ে সমজাতীয় সবগুলো হরফকে উচ্চারণ করি। বাস্তবিকভাবে তোমার মনে হবে, এটা তো নরমাল ই। কিন্তু আসলে তা না!এটার জন্য
অর্থের কত মারাত্মক বিকৃতি হয়ে যায়!
–বুঝলাম শায়খ, বুঝলাম!!!!!!!
এখন আপনি বলুন তো, আপনি মাশাআল্লাহ এত কিছু কিভাবে জানেন? হিফয করেছিলেন?
–নাহ, হিফয করার সৌভাগ্য আমার হয়নি। আর কেবলমাত্র হিফয করলেই সহীহভাবে পড়তে পারব, নাহয় পারব না, এটা কে বললো আমিনা? তাজউইদ শেখা তো ফারজে আইন। সেটা শেখা তো প্রত্যেকটা মুসলমানের উপর ফরজ।
–ফারজে আইন? সেটা আবার কি?
–সেটাও এক প্রকার ফরজ আরকি।
–মানে? ঠিক বুঝলাম না।
–ফরজ মানে কি বলো তো? ফরজ মানে হলো যেটা করতেই হবে, অর্থাৎ অবশ্য পালনীয় কাজ, বুঝেছ?
–হু, তা তো জানি ই।
–আর এই ফরজ দুই প্রকার,
১.ফারজে আইন।
২.ফারজে কেফায়া।
এখন আসি ফারজে আইন নিয়ে কেমন?
প্রাপ্ত বয়স্ক সবার উপর যাই বাধ্যতামূলক তাই ফরজে আইন। যেমন, পাঁচওয়াক্ত নামাজ ও রমজানের রোজা, সামর্থ্য হলে হজ্ব, যাকাত, পর্দা, তাজউইদসহ কুরআন তিলাওয়াত, ইত্যাদি।
আর ফারজে কেফায়া হলো, যা মুসলমানের জন্য ফরজ কিন্তু সবার পক্ষ থেকে একজন পালন করলে সবার আদায় হবে তা।
যেমন, জানাযার নামাজ, হিজরী তারিখের হিসাব রাখা, পরশুদ্ধি ইত্যাদি!!!!!!!
বুঝলে? ক্লিয়ার হলো?
–হু, বুঝলাম। আচ্ছা, এখন তো সকাল হয়ে গেছে। আমরা কালকে থেকে পড়বো কেমন?
–না, এখন থেকেই পড়বো। জানো সূরা মুযযম্মিলের চার নং আয়াতে আল্লাহ আমাদের স্পষ্টভাবে কুরআন তিলাওয়াতের আদেশ দিয়েছেন। আর জানো হাদিসে আছে, "তোমরা তোমাদের ধ্বনির সাহায্যে কুরআনকে সুষমামন্ডিত কর, অথবা তোমরা কুরআনকে তাজউইদ ও তারতীলের সাথে সুন্দরভাবে পাঠ কর। "
সম্ভবত এটা আবু দাউদের ১৪৬৮ নং হাদিস। এখন দেখি এদিকে এসো। খাতাটা দাও। আমি লিখছি তাজউইদ কি!!!!!!!
ইনশাআল্লাহ চলবে!!!!!!!
উপসংহার
এটি একটি ইসলামিক স্বামী ও স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প, যারা ইসলামিকভাবে তাদের বিবাহিত জীবনকে গড়ে তুলেছে। যদি আমাদের ইসলামিক স্বামী ও স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প পর্ব – ৯ (Islamic Love story of husband and wife episode – 9) গল্পটি ভালো লাগে তাহলে শেয়ার করুন। ইসলামিক স্বামী ও স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প পর্ব – ৯ (Islamic Love story of husband and wife episode – 9) গল্পটির ধারাবাহিকতা অনুসরন করতে ইসলামিক স্বামী ও স্ত্রীর ভালোবাসার গল্প ১২টি পর্ব (Islamic Love story of husband and wife 12 part) পোস্টটি আলোকপাত করুন।
অনলাইন কোরআন ও হাদিসসমূহের লিঙ্ক বাংলা হাদিস বিডি